অন্যান্য

পুরুষবিদ্বেষী নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রত্যাখান ও কমিশন বাতিলের দাবিতে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজিত হয়।

২৬/০৪/২০২৫ বেলা ১১ টায় , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল‍্যবোধ বিবর্জিত নারী কমিশনের প্রতিবেদন বাতিল এবং কমিশন বিলুপ্ত দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশটি আয়োজিত হয়।

উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, নারী কমিশনের প্রস্তাবনায় জাতীয় সংসদের প্রস্তাবিত ৬০০ আসনের মধ্যে ৩০০ আসনে নারী কোটার দাবি শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানীর শামিল। গত ১৯ এপ্রিল ২০২৫, একটি সংবাদ সম্মেলনে নারী সংস্কার কমিশনের নামে নারীবাদীরা পেশাদার যৌনকর্মের বৈধতা চেয়ে, স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দেওয়ার সুযোগ চেয়ে, এবং পবিত্র কোরআনে বর্ণিত মুসলিম উত্তরাধিকার সম্পত্তি বন্টনের আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে সেটি বাতিল করে পশ্চিমাদের মত বাংলাদেশেও নারীবাদী আইনে সম্পত্তি বন্টনের দাবি জানিয়েছে।

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন সম্পর্কে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের আইন উপদেষ্টা এডভোকেট কাওসার হোসাইন বলেন, এই প্রতিবেদন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক তো বটেই, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস ও নৈতিকতার সঙ্গেও বৈসাদৃশ্যপূর্ণ। এবং এদেশের মানুষের ধর্ম পালনের সাংবিধানিক অধিকার পরিপন্থী। প্রস্তাবনায় এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীদের বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। প্রতিবেদনের পরতে পরতে আঁকা হয়েছে পরিবার ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার ও পুরুষের অধিকার খর্ব করে পুরুষ নির্যাতনের আইনি ফাঁদে এক গভীর নীলনকশা।

এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম বলেন, আমরা মনে করি মূলত নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন ধর্মবিদ্বেষী, পুরুষবিদ্বেষী ও পশ্চিমাদের অন্ধ অনুসারী নারীবাদী শ্রেণিদের নিয়ে গঠিত— যারা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস, সামাজিক মূল্যবোধ ও পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই কমিশন এদেশে পশ্চিমা ধ‍্যান-ধারণা চাপিয়ে দিতে সচেষ্ট। তাদের সাথে দেশের সাধারণ মানুষের কোনো সম্পর্ক নেই। অবিলম্বে আমরা ধর্মীয় ও সামাজিক মূল‍্যবোধ বিবর্জিত এই প্রতিবেদন বাতিল এবং বিতর্কিত কমিশন বিলুপ্ত করে এদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনা এবং সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষ এবং পুরুষ অধিকার কর্মীদের প্রতিনিধি সহ নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি করছি। এবং পুরুষের অধিকার পরিপন্থী তথা পুরুষবিদ্বেষী সমস্ত প্রস্তাবনা ও আইন বাতিল করতে হবে। এছাড়াও অবিলম্বে পুরুষ সুরক্ষা কমিশন ও করতে হবে।

এই কমিশন জাতীয় সংসদে নিম্নকক্ষে মোট আসনের অর্ধেক আসনে, (অর্থাৎ ৫০% আসনে), নারীকোটা চেয়েছে, এবং উচ্চকক্ষে ৫০% নারীকোটা রাখার পাশাপাশি, নারীবাদী নেত্রীদের জন্য অতিরিক্ত আরও ৫% কোটা দাবির বিষয়ে সংগঠনের ঢাকা কমিটির সহ- সভাপতি জনাব ইফতেখার হোসেন বলেন, আমরা সমানাধিকারে বিশ্বাস করি কিন্তু বিশেষ আসনে নয়, সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নারী ও পুরুষের অবস্থান চাই। নারীবাদিরা তাদের জন্য ৩০০ আসন কোটায় চায় আবার অন্যান্য আসন গুলোতে সেখানে আবার পুরুষের বিরুদ্ধে নারীরাও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে চায়। আমরা মনে করি এই প্রস্তাবটি ‘নারী-পুরুষ সমানাধিকার’-এর মূল চেতনার, ও গনতন্ত্রের চেতনার সাথে সুস্পস্ট সাং ঘর্ষিক। আজকের প্রজন্ম লিঙ্গ নয়, যোগ্যতা ও নেতৃত্বে বিশ্বাস করে। রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে, বিশেষ আসন নয় — সমান সুযোগ ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করাই হবে যথাযথ পথ। কোটা বা আলাদা আসন নারীকে ক্ষমতায়িত করে না, বরং প্রতিযোগিতার বাইরে রাখে। যা নারীর জন্য মোটেও সম্মানজনক নয়।

এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের ঢাকা কমিটির দপ্তর সম্পাদক বলেন,, আমরা চাই নারীরা পুরুষের সমান হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক তারা ক্ষমতায় নয়, যোগ্যতায় উঠে আসুক। কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রতি জনসমর্থনকে পুঁজি করে দল গঠন করে এখন আবার জাতীয় নির্বাচনে নারী-কোটা চাচ্ছে এনসিপি! এনসিপিকে নিয়ে আমাদের তরুণদের অনেক আশা ভরসা ছিল, অথচ শেষপর্যন্ত শহীদদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল দলটি।

সংগঠনের অর্থ সম্পাদক জনাব আল আমিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খোকন, সাংবাদিক শাহজালাল উদ্দিন।

আলী মুর্তজা রাজু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধ্রুবকন্ঠ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button