অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, আধুনিক ফুটবলের নিখুঁত শিল্পী

ফুটবল ইতিহাসের গল্পেরা এমন কিছু নামের জন্ম দেয়, যারা টেকনিক আর তাত্ত্বিক সৌন্দর্য একসাথে বয়ে আনে। অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার সেই বিরল প্রজাতির প্রতিনিধি। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ সবাই যখন মেসির জাদুতে মোহিত, তখন আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকা ম্যাক অ্যালিস্টার ছিলেন আর্জেন্টিনার আসল স্থিতিশীলতা। মিডফিল্ডে ওর নিখুঁত পজিশনিং, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া আর নিঃশব্দে গেম ডিক্টেট করার ক্ষমতা যেন আর্জেন্টিনার হৃদস্পন্দন ছিল।
ব্রাইটনে এসে ইংলিশ ফুটবলের গতিময়ে নিজের ছাপ রেখে গেলো। বল পায়ে ওর সাহসিকতা, লাইনভাঙা পাস আর ফিনিশিং টাচ দেখিয়ে দিল শুধু আর্জেন্টাইন গার্ডিয়ান না, ও একজন সম্পূর্ণ ফুটবলার।
এরপর ট্রান্সফার হলো ঐতিহাসিক ক্লাবে লিভারপুলে।
সেখানে রিদম আর ইম্প্যাক্ট দুটোতেই অ্যালেক্সিস যেন এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলো। ২৪-২৫ মৌসুমে লিভারপুলের হয়ে প্রথম প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা জয়ের রাতে, ডি-বক্সের বাইরে থেকে করা ওর গোল এককথায় কারুকার্যের প্রতীক। বড় ম্যাচের চাপেও বল পায়ে ঐতিহ্যবাহী আর্জেন্টাইন ধৈর্য আর ইউরোপীয় ধারাবাহিকতা মিলিয়ে এক অমলিন ছাপ রেখে গেলো।
আশ্চর্যের ব্যাপার, এই ম্যাক অ্যালিস্টারের বাবা খেলেছিলেন ম্যারাডোনার সাথে। আর এখন ছেলে খেলছে মেসির সাথে দুই যুগের দুই গ্রেটের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা এক ফুটবল উত্তরাধিকার। ম্যারাডোনার সময়ের রূপকথা আর মেসির সময়ের বিজ্ঞানের সংমিশ্রণ যেন অ্যালেক্সিসের ফুটবল।
বলতে দ্বিধা নেই, ম্যাক অ্যালিস্টার আজকের দিনে এমন এক মিডফিল্ডার, যার খেলা দেখে ফুটবল শুধু খেলা নয়, বরং একটা শিল্প বলেই মনে হয়। এমন পরিচ্ছন্ন সৌন্দর্য, এত নিখুঁত টেকনিক, এত গভীরতা বর্তমান ফুটবলে সত্যিই বিরল।
অ্যালেক্সিস, তুমি নিজেই এক অনুপম সিম্ফনি।
এই সময়ের ফুটবল প্রেমীরা ভাগ্যবান, তোমাকে দেখতে পেয়ে।
ধ্রুবকন্ঠ/এমআর