খেলাধুলা

ইয়ামালের একের পর এক চেষ্টা ঠেকিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচের নায়ক সোমের

বলা হয়, গোলরক্ষকেরা যেখানে হাঁটেন, সেখানে নাকি ঘাসও জন্মায় না। মানে, এতটাই নেতিবাচক প্রভাব থাকে তাঁর মাঠে। যে লোকটা গোল খেলে দল হেরে যায়, তাঁকে কে পছন্দ করবে!

কথাটা সব সময় সত্যি নয়। গোলরক্ষকেরাও ফুল ফোটাতে পারেন। তেমনই এক ফুল ফোটানো ম্যাচ গতকাল রাতে উপহার দিয়েছেন ইন্টার মিলান গোলরক্ষক ইয়ান সোমের। বার্সেলোনার বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ খেলেছেন এই গোলরক্ষক।

একের পর এক সেভ করে উসিএল সেমিফাইনালের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ম্যাচটির অন্যতম নায়কও তিনিই। সোমেরের নৈপুণ্যেই বার্সেলোনার বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ গোলে জিতে ফাইনালে ইন্টার।

২ লেগ মিলিয়ে ইন্টার মিলান হজম করেছেন ৬ গোল। সাদা চোখে মনে হতে পারে এতগুলো গোল খাওয়া একজন কীভাবে ম্যাচের নায়ক হন? কিন্তু যাঁরা দুই লেগের খেলা দেখেছেন, তাঁরাই শুধু বুঝবেন সোমেরের মাহাত্ম্য। কীভাবে বার্সার পরাক্রমশালী আক্রমণভাগের সামনে দাঁড়িয়ে একের পর এক গোল বাঁচিয়েছেন! রাতে সব মিলিয়ে সোমের ঠেকিয়েছেন ৭টি গোল হওয়ার মতো শট। আর দুই লেগ মিলিয়ে এই গোলরক্ষকের সেইভ ১৪টি!

পোস্টের নিচে মহানায়ক হওয়া সোমের সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছেন বার্সার ‘পোস্টার বয়’ লামিনে ইয়ামালকে। ১৭ বছর বয়সী ছেলেটির শট একের পর এক ঠেকিয়েছেন সোমের। গতকাল রাতে সব মিলিয়ে ৯টি শট নেন ইয়ামাল। যার মধ্যে ৫টি ছিল লক্ষ্যে, কিন্তু কোনোটিই সোমেরের গড়ে তোলা প্রাচীর কে টপকাতে পারেনি। এর আগে প্রথম লেগে ৬টি শট নিয়ে ২টি লক্ষ্যে রাখেন ইয়ামাল। যার একটিই শুধু গোল হয়েছে।

ভরপুর আত্মবিশ্বাস নিয়ে গতকাল দ্বিতীয় লেগ খেলতে মিলানে এসেছিলেন ইয়ামাল। খেলেছেনও মনে রাখার মতো। তটস্থ করে রেখেছিলেন ইন্টারের রক্ষণকে। কিন্তু শেষ বাধাটা কোনোভাবেই আর পেরোতে পারলেন না। একের পর এক তাঁর নেওয়া শট ঠেকিয়ে নায়ক হয়ে গেলেন ইটার গোল কিপার। ম্যাচ শেষে তাই হয়তো একটু বেশিই ভেঙে পড়েছিলেন এই বার্সা তরুণ।

ইয়ামালের হতাশায় ভেঙে পড়ার বিপরীতে কাল রাতটা স্মরণীয় করে রাখলেন সোমের। ম্যাচ শেষে তাঁর কণ্ঠেও ছিল উচ্ছ্বাসের সুর। বললেন ইয়ামালের শটে করা সেই সেভটি নিয়েও, ‘আমি খুবই আনন্দিত। অবিশ্বাস্য একটা ম্যাচ ছিল এটা। দল আজ রাতে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে। লামিনের (ইয়ামাল) শটে শেষ সেভটা খুবই বিশেষ কিছু। সে অসাধারণ একজন খেলোয়াড়, যে সব সময় ভেতরে ঢুকে শট নেয়। আমি খুশি যে বলটি জালে জড়ায়নি। এই ম্যাচ দেখিয়েছে যে আমাদের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিশ্বাস রাখা উচিত।’

চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল নিশ্চিত করে উচ্ছ্বসিত সোমের, ‘এমন মুহূর্তগুলোর জন্যই আমি পরিশ্রম করি, এ ধরনের ম্যাচের জন্য। এখানে দারুণ একটি দল এবং সতীর্থদের সঙ্গে আছি। আমরা এখন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলব।’

ধ্রুবকন্ঠ/এমআর

মোহাম্মদ রায়হান

স্পোর্টস ডেস্ক, ধ্রুবকন্ঠ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button