নোবিপ্রবিতে কুকুর প্রেমিক শিক্ষার্থীকে হেনস্তা, দোকানদারের প্রকাশ্যে হুমকি

মো: নূর উন নবী সিয়াম
নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) পকেট গেট এলাকায় কুকুর খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে কুকুর প্রেমিক এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে দোকানদারের চরম দুর্ব্যবহার ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুজন আল মাহমুদ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী, তিনি জানান—তিনি নিয়মিত ক্যাম্পাসের অসহায় কুকুর ও বিড়ালদের খাবার দিয়ে থাকেন এবং একটি ইনফেকশনে আক্রান্ত কুকুরের বাচ্চাকে তিনি গত কয়েকদিন ধরে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। সুজনের দাবি, “আমি কোনো কুকুর পুষি না, কিন্তু মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে তাদের খাবার দিই। এই কারণে কুকুরেরা মাঝে মাঝে আমার পেছনে হাঁটে।”
ঘটনার সূত্রপাত হয়, পকেট গেট এলাকার দোকানদার আনোয়ার শাদাত শিশিরের মুরগি একটি কুকুর খেয়ে ফেলায়। এরপর শিশির ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুজনের সাথে প্রকাশ্যে চিৎকার করেন এবং কুকুর মারার হুমকি দেন। শিক্ষার্থীর অভিযোগ, “আমি তার ক্ষতিপূরণ দিতেও রাজি ছিলাম, তবুও তিনি আমার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন এবং সামাজিক মাধ্যমে হুমকিমূলক পোস্ট দেন।”
শুধু এই ঘটনাই নয়, শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, উক্ত দোকানদার অতিরিক্ত মূল্য আদায়, অভিযোগ করায় শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়াসহ বিভিন্ন অসংগত আচরণে জড়িত। এমনকি তার দোকানে ফ্রিজে রাখা জিনিস হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগও আছে, অথচ সে মাসে ৩০০ টাকা করে নেয়।
সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত পোস্টে দোকানদার শিশির লিখেছেন, ”আপনারা যারা কুকুরের ভরণপোষণ এর দায়িত্বে আছেন তারা অবশ্যই আপনাদের কুকুরগুলো স্ব সাবধানে রাখবেন। আপনাদের কুকুর আমাদের বারবার ক্ষতিগ্রস্ত করছেন। পরবর্তী কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় ভার আপনাকেই নিতে হবে।” যা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা করছেন, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে ক্যাম্পাসে মানবিক কাজ যেমন পশুদের সহায়তা—তা ব্যাহত হবে। তাই তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন, যেন ক্যাম্পাসের ব্যবসায়ীদের আচরণবিধি নির্ধারণ করা হয় এবং মানবিক কাজকে সম্মান করা হয়। একইসাথে, পশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অসহায় প্রাণীদের সহায়তাকারীদের প্রতি সম্মান বজায় রাখার পরিবেশ তৈরি করা হয়।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানদার আনোয়ার শাদাত শিশির বলেন, আমি সে শিক্ষার্থীকে অনেকবার বলেছিলাম যে তুমি যেহেতু কুকুরটাকে কেয়ার করো তোমার এই কুকুর তিনবার আমার মুরগী নিয়ে গেছে এই বিষয় নিয়েই তাকে বলেছি। হুমকির দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, হুমকি আমি ওই শিক্ষার্থীকে দি নাই কুকুরের কথা বুঝিয়েছি কারণ আমার বারবার ক্ষতি করতেছে।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ.এফ.এম. আরিফুর রহমান বলেন, এই বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। আগামীকাল আমাদের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় এরপরে এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।